মার্কিন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এক্সন মবিল ৬ হাজার কোটি ডলারে পাইওনিয়ার ন্যাচারাল রিসোর্স অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে। অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্স।
চুক্তি সফল হলে দীর্ঘদিন পরে এটা এক্সনের বড় কোনো অধিগ্রহণের ঘটনা হবে। ১৯৯৮ সালে এক্সন করপোরেশন ৮ হাজার ১০০ কোটি ডলারে মবিল করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করে। সম্প্রসারণ হয় জ্বালানি তেল ও গ্যাসের ব্যবসা। পাইওনিয়ারের সংযোগ তাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাইওনিয়ারের বর্তমান বাজার মূল্য ৫ হাজার কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের পারমিয়ান বেসিনে শেভরন করপোরেশন এবং কনোকোফিলিপসের পর তৃতীয় বৃহৎ জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এটি। সুলভ মূল্য জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খাতে পরিচিত পারমিয়ান।
আলোচনা যথাযথভাবে এগিয়ে গেলে এক্সন ও পাইওনিয়ার চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বেশ অগ্রগিত হয়েছে। যদিও এক্সন ও পাইওনিয়ারের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। এর আগে ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটা চুক্তি হতে যাচ্ছে।
এক্সনের বাজার মূল্য ৪৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বৃহৎ জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী। প্রতিদিন গড়ে ৩৮ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উৎপাদন করে কোম্পানিটি। গত বছরে প্রতিষ্ঠানটির আয় ছিল ৫ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার। জ্বালানি ও গ্যাসের উচ্চ দামের কারণে আয় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে কোম্পানির আয়ে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জ্বালানি ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ঘটেছিল, তা সম্প্রতি কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে চাহিদা কমে যাওয়ায়।
পাইওনিয়ারকে অধিগ্রহণ করা হলে এক্সনের জ্বালানি তেল উৎপাদনের পরিধি আরো সম্প্রসারণ হবে। এক্সন পারমিয়ান বেসিন থেকে দ্বিতীয় প্রান্তিকে দৈনিক গড়ে ৬ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেলের সমমানের জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপাদন করে। তার পরও এ উৎপাদন পাইওনিয়ারের উৎপাদন অপেক্ষা কম। পাইওনিয়ার গড়ে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৭ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেলের সমমানের জ্বালানি তেল ও গ্যাস উৎপাদন করে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক্সনের বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউজের অভিযোগ ছিল, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে সামনে হতে যাওয়া চুক্তি রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারকদের জন্য মনোযোগের বিষয় হয়ে থাকবে।
নতুন অঞ্চলে খননকার্য পরিচালনায় নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকার কারণে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও চুক্তির দিকে মনোযোগী হচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে শেভরন করপোরেশন অধিগ্রহণ করে নেয় পিডিসি এনার্জি ইনকরপোরেশনকে।
Leave a Reply