1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
র‌য়্যাল এনফিল্ডের ৩৫০ সিসির নতুন ৪ বাইকের যত ফিচার ঝালকাঠি থেকে ১১ রুটে বাস চলাচল বন্ধ বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী ১০ দেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হলেন স্টার লাইনের হাজী আলাউদ্দিন তরুণরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নামুক আবার পেট্রোনাস লুব্রিক্যান্টস বিক্রি করবে মেঘনা পেট্রোলিয়াম অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশে ভারতীয় সব ভিসা সেন্টার বন্ধ মন্ত্রী এমপিদের দেশত্যাগের হিড়িক : নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছেন অনেকেই বাস ড্রাইভার নিকোলাস মাদুরো আবারও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট ইউএস-বাংলার দশম বর্ষপূর্তি : ২৪ এয়ারক্রাফট দিয়ে দেশে বিদেশে ২০ গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা

বিশ্ব ডাক দিবস আজ : শেষ হয়ে গেছে চিঠির যুগ

জিন্নাতুন নূর
  • আপডেট : সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩

হাতে লেখা ব্যক্তিগত চিঠি চালাচালির সেই সোনালি যুগ শেষ। আধুনিক সময়ে এসে ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিসের কাজকর্ম মোবাইলের খুদে বার্তা বা ই-মেইল নির্ভর হয়ে পড়েছে। শহরের পুরনো জীর্ণশীর্ণ ডাকবাক্সগুলো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জং ধরা ডাকবাক্সগুলোতে এখন আর কেউ চিঠি ফেলেন না।
অনেক বাক্স লতাপাতার আড়ালে হারিয়ে গিয়েছে। আবার অনেক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উঠিয়ে নিয়ে গেছে। পোস্ট অফিসে হাতে লেখা চিঠির পরিমাণ যে কমে গিয়েছে এটি স্বীকার করেছেন খোদ ডাক বিভাগের কর্মকর্তারাও। তবে আধুনিক সময়ে এসে মানুষের আস্থা ধরে রাখতে সেবার ধরন বদলেছে ডাক বিভাগ।
উন্নত সেবা দিতে আধুনিক অ্যাপসের ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ সেবার মধ্যে আছে- ডাকযোগে ভূমি সেবা, ড্রাইভিং লাইসেন্স সেবা, পাসপোর্ট সেবা এবং ডাকযোগে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা। এই অবস্থায় আজ দেশব্যাপী পালিত হবে বিশ্ব ডাক দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘টুগেদার ফর ট্রাস্ট কলাবরেশন ফর এ সেইফ অ্যান্ড কানেক্টেড ফিউচার’।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে ডাক বিভাগের চিঠি ও পার্সেল ইস্যুর সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৭৫৭টি। যা ২০২১-২২ অর্থবছরে কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটিতে। ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সেবাগ্রহীতাদের ডাক দ্রব্যের রেজিস্ট্রি সেবা, গ্যারান্টেড এক্সপ্রেস পোস্ট সেবা, পার্সেল সেবা, ভ্যালু পেয়েবল পার্সেল (ই-কমার্সেও পুরনো রূপ) সেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে গ্রাহকরা বিশেষ কিছু সেবা নিচ্ছেন। এর মধ্যে আছে- ডাকযোগে ভূমি সেবা, ডাকযোগে ড্রাইভিং লাইসেন্স সেবা, ডাকযোগে পাসপোর্ট সেবা এবং ডাকযোগে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা।
জাতীয়, উন্মুক্ত ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে সারা বছরই পরীক্ষা হয়। এই পরীক্ষাগুলোর উত্তরপত্র ডাকের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরীক্ষা বোর্ডে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে ডাক বিভাগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডাক অধিদফতরের একজন ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (সংযুক্ত সরবরাহ শাখা) বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ ও মোবাইলের খুদে বার্তার কারণে ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা শুভেচ্ছা জানাতে মানুষের মধ্যে হাতে লেখা চিঠির আবেদন কমে গেছে। আগের চেয়ে চিঠি চালাচালির পরিমাণ কমেছে একথা সত্য। তবে দাফতরিক চিঠি, ই-কমার্স পণ্য পাঠাতে একজন বহনকারী লাগবেই। এখন মানুষকে কোনো পণ্য কিনে তা অর্ডার ভার্চুয়ালি দিলেও ডাকে বা অন্য কোনো মাধ্যমে এর গন্তব্যে পাঠাতে হবে। ডাকপিয়নের পোস্টও আসে শুধু এটি বহন করে নিয়ে যাওয়ার ধরন বদলেছে।
ডাক অধিদফতরের শাখা কর্মকর্তা মো. আজহারুল হক বলেন, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডাক বিভাগের কাজের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। এখন একজন চিঠি পাঠালে তা প্রাপকের কাছে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত ট্র্যাকিং করার ব্যবস্থা রয়েছে। ডমিস্টিক মেইল মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে একটি চিঠি বা পার্সেল ঘরে বসেই ট্র্যাক করা যাচ্ছে। দেশের ছোট-বড় মিলিয়ে যতগুলো ডাক অফিস আছে সবখানে পজ মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। যার মধ্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া আছে এবং এর মধ্যে ডাকের তথ্যগুলো দেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পার্সেল সুবিধার জন্য রাগবি সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিসের মাধ্যমে যাতে আরও ভালো সেবা দেওয়া যায় এ জন্য সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। ১৪টি আধুনিক মেইল প্রসেসিং সেন্টার করা হয়েছে। যেখানে স্ক্যানিং মেশিন আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডাক বিভাগকে আধুনিক করতে এসব ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া ফ্রোজেন আইটেম সংরক্ষণ করাসহ তা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে ১ হাজারটি থার্মাল বক্স ক্রয় করেছে ডাক বিভাগ। এতে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত পণ্য ভালো থাকে। এ ছাড়া ব্যাগেজ স্ক্যানিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কেউ ব্যাগে অবৈধ কিছু পাঠাচ্ছে কিনা এর তদারকি করা সম্ভব। ডাক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মহানগরে এখন ১১৮টি চিঠির বাক্স আছে। কিন্তু সেগুলো তেমন কোনো কাজে আসে না। সড়ক সংস্কারসহ নানা কাজে এগুলো তুলে নেওয়া হচ্ছে। কাজের ক্ষেত্র কমে এসেছে ডাকপিয়নদেরও। আগের মতো তারা এখন আর চিঠি বিলি করেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দাফতরিক চিঠি বিলি করেন। এর সঙ্গে থাকে কিছু পার্সেল। মোবাইল ও অনলাইন ব্যাংকিং চালু হওয়ায় এখন মানি অর্ডারের হারও তলানিতে ঠেকেছে। ডাকপিয়ন আগে হেঁটে, বাইসাইকেলে বা রিকশায় চড়ে চিঠিপত্র বিলি করলেও এখন ডাক বিভাগের গাড়িই এগুলো বহন করছে। ডাকের গাড়িতে চালকের সঙ্গে ডাকপিয়নরাও থাকেন। প্রত্যন্ত কোনো এলাকায় গাড়ি চলার পথ না থাকলে পিয়নরা চিঠির বোঝা নির্দিষ্ট ডাকঘরে পৌঁছে দেন। পোস্ট অফিসগুলোতে চিঠিপত্র ও পার্সেল বিভাগে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা কম হলেও ডাক জীবনবীমা, সঞ্চয় ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র বিভাগে ভিড় বেশি। পরিমাণে কম হলেও এখনো ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার হয়। পার্সেলের বুকিং হয়। ডাক বিভাগ সূত্র আরও বলছে, সারা দেশে এখনো ৯ হাজার ৯৭৪টি ডাকঘর চালু আছে। ডাক বিভাগ মূলত দুই ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। এতে মূল সেবার মধ্যে আছে সাধারণ চিঠিপত্র, রেজিস্টার্ড চিঠিপত্র, জিইপি, ইএমএস, মানি অর্ডার, পার্সেল সেবা, ভিপিপি, ভিপিএল, ডাকটিকিট, ডাকদ্রব্য গ্রহণ, প্রেরণ ও বিলি, ইলেকট্রনিক মানি অর্ডার, ক্যাশ কার্ড ও স্পিড পোস্ট। এ ছাড়া এজেন্সি সেবার মধ্যে আছে ডাক জীবনবীমা, সঞ্চয় ব্যাংক, সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড, পোস্টাল অর্ডার, নন-পোস্টাল টিকিট মুদ্রণ ও বিতরণ। সেবার আধুনিকায়ন ও ই-কমার্স পণ্য পরিবহনের সেবা বৃদ্ধির জন্য দেশজুড়ে ডাক অধিদফতরের বিদ্যমান কর্মসূচি পরিবর্তন ও ঢেলে সাজানো হয়েছে। পুরনো সেবা প্রদানের সঙ্গে ডাকঘরের মাধ্যমে রান্না করা খাবার ও কাঁচা শাকসবজি ইত্যাদি পরিবহনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া জেলা ও বিভাগীয় সদরে আধুনিক মেইল প্রসেসিং, ডিজিটাল সুবিধা সংবলিত এবং গ্রাহকবান্ধব ৩৮টি মডেল ডাকঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর গ্রামীণ ডাকঘর বা ই-সেন্টারগুলো দেশের গ্রামীণ এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এরই মধ্যে ৫৯০টি নতুন ডাকঘর ভবন নির্মাণ করা হয়েছে এবং ১২৭৩টি ডাকঘর মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে। পোস্ট ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের মানুষের জন্য ইন্টারনেট ও অন্য প্রযুক্তিগত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবক্যামেরার মাধ্যমে প্রবাসীদের সঙ্গে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ যোগাযোগ করছেন। এ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে সাড়ে ৮ হাজারটি ডাকঘরে পোস্ট ই-সেন্টার চালু করা হয়েছে। ‘ডাক বিভাগের কার্য প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়করণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ডাকঘরগুলোকে ক্রমান্বয়ে একটি একক ইলেট্রনিক নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৭১টি প্রধান ডাকঘর, ১৩টি মেইল অ্যান্ড শর্টিং অফিস এবং ২০০টি উপজেলা পোস্ট অফিস এবং টাউন সাব পোস্ট অফিসকে অটোমেশনের আওতায় আনা হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত আর্থিক সুবিধা পৌঁছে দিতে ২৭৫০টি পোস্ট অফিসে ইএমটিএস সেবা চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশ থেকে আসা ও বিদেশগামী চিঠি, ইএমএস ও পার্সেল ট্র্যাক ও ট্রেসিং করা যাচ্ছে। ডাক অধিদফতরের ডিজিটাল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এর মাধ্যমে সারা দেশের ৮ কোটি গ্রাহক আর্থিক লেনদেনের সুবিধা নিচ্ছেন। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় প্রায় ২ কোটি ভাতা ভোগীদের ভাতা বিতরণ করা হচ্ছে।
উৎস: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT