আগস্ট মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৮৮টি দুর্ঘটনায় ৪৫৯জন নিহত ও ৬১৮জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৪জন নিহত ও ০৩জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ৪১টি দুর্ঘটনায় ৮০জন নিহত ও ৫২জন আহত এবং ৩১জন নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৪৪৪টি দুর্ঘটনায় ৫৫৩জন নিহত এবং ৬৬৯জন আহত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে আজ ১৬ আগস্ট বুধবার সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এইমাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ১৯৮জন চালক, ১২৫জন পথচারী, ৮০জন নারী, ৪৪জন শিশু, ৩৮জন শিক্ষার্থী, ২২জন পরিবহন শ্রমিক, ০৯জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ০৬জন পুলিশ, ০১জন বিমানবাহিনী, ০১জন সিআইডি ও ০১জন সেনাবাহিনীর সদস্য, ০৯জন শিক্ষক, ০৮জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ০৩জন চিকিৎসক, ০১ জন সাংবাদিক এবং ০১জন প্রকৌশলীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ০৪ আগস্ট এইদিনে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২জন নিহত ৪৬জন আহত হয়। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৯ আগস্ট ৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ০৪জন নিহত ০৩জন আহত হয়। মোট দুর্ঘটনার ৫২.৮৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৭.৮৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩.৯১ শতাংশ খাদে পড়ে, ৪.৮৯ শতাংশ বিবিধ কারনে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষ এবং ০.২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে এইমাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪৮.৯৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৪.৬৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.১৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২.০৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.২৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশকালে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও জাতীয় মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা ইজিবাইক উঠে আসায় এবং বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারনে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেলের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও বেপরোয়া চলাচল সড়ক নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাড়াঁচ্ছে। এছাড়াও সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহীতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যাতিরেখে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
Leave a Reply