আন্তজেলা বাসগুলোকে আর ঢাকা মহানগরের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, বাইরের বাস রাজধানীর সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্ধারিত আন্তজেলা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে চলে যাবে। এতে ঢাকা শহরের ওপর গাড়ির চাপ কিছুটা হলেও কমবে। ঢাকায় ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে বাস চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
নগর ভবনে গতকাল গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনয়ন ও যানজট নিরসনে ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ নামের কমিটির ১৩তম সভায় ডিএসসিসি মেয়র এসব কথা বলেন। শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, শহরের সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্ধারিত আন্তজেলা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে দেওয়ার পর সেসব টার্মিনাল থেকে সিটি সার্ভিস বা এমআরটি বা সেবা প্রদানকারী বাহনের মাধ্যমে যাত্রীরা নিজ গন্তব্যে যাতায়াত করবেন। আগামী বছরের মধ্যেই ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন’ কার্যক্রম দৃশ্যমান পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
রাজধানীতে বর্তমানে চলাচলকারী বাসগুলোর ২৯১টি রুট থেকে কমিয়ে ৪২টি রুটে নিয়ে আসা এবং ২ হাজার ৫০০ বাস মালিকের চলাচলকারী বাসগুলোকে সন্নিবেশ করে ২২টি কোম্পানি করার প্রাথমিক প্রস্তাব বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান ডিএসসিসি মেয়র। তিনি বলেন, ‘বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির কাছে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করেছি। বর্তমানে ঢাকা শহরে ২৯১টি রুটে ২ হাজার ৫০০ বাস মালিকের বাস চলাচল করছে। সেগুলোকে সন্নিবেশ করে ৪২টি রুট ও ২২টি কোম্পানি করার প্রাথমিক প্রস্তাব করা রয়েছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বর্তমান বাস মালিকরা কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডার হবেন।’
উত্তর সিটি করপোরেশনের মহাখালী ও গাবতলী এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শুধু সায়েদাবাদ বাসটার্মিনাল আছে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র আরও বলেন, ‘টার্মিনালগুলোতে বাস সংকুলান হয় না। ফলে বাসগুলোকে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ওপর রাখা হয়। এ কারণে বড় ধরনের যানজটের সৃষ্টি হয়। ডিটিসিএর নিযুক্ত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আন্তজেলা বাস টার্মিনাল স্থাপনের জন্য যে জায়গা প্রস্তাব করেছে, তার সম্পূর্ণ একটি সমীক্ষা আগামী মার্চ মাসের মধ্যে শেষ হবে। তারপর আমরা পরবর্তী ধাপে আমাদের কার্যক্রম নিয়ে যেতে পারব।’
বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে তার মতামত জানান। বৈঠকে কমিটির সদস্যদের মধ্যে ডিএমপি পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. এহসানে এলাহী, রাজউক চেয়ারম্যান মো. সাঈদ নূর আলম, বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সদস্যসচিব ও ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা নিয়ে আসতে এই পরিকল্পনার সঙ্গে আমরা একমত। ২৯১টি রুট থেকে কমিয়ে ৪২টি রুটে নিয়ে আসা এবং ২২টি কোম্পানি করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে কাজ করছেন। আমরা আবারও সার্বিক বিষয়ে বসব। সুষ্ঠু সড়ক ব্যবস্থাপনায় আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।
Leave a Reply