1. paribahanjagot@gmail.com : pjeditor :
  2. jadusoftbd@gmail.com : webadmin :
রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
আগামীকাল থেকে বিরতিহীন ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ শিপিং কর্পোরেশনের বহরে ২১টি জাহাজ যুক্ত হবে : নৌপ্রতিমন্ত্রী টাঙ্গাইলে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে দুর্বৃত্তের আগুন ‘দুর্নীতিগ্রস্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে আর থাকবে না’ কক্সবাজার-দোহাজারী রেল লাইন : প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন, শেষ হলো অপেক্ষা সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫% বাঁক ও ক্রসিংয়ে, বাঁক সোজা করার সুপারিশ সংসদীয় কমিটির বঙ্গবন্ধু টানেলে রেসের ঘটনায় ৫ গাড়ি জব্দ : দুজন গ্রেপ্তার অক্টোবরে ৪২৯ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৭ জন নিহত, ড্রাইভার মারা গেছে ১২০ জন : যাত্রী কল্যাণ সমিতি বিমানের কোটি কোটি টাকা পাওনা রয়েছে এমন অনেক ট্রাভেল এজেন্সির অস্তিত্ব নেই : প্রতিমন্ত্রী মেট্রো রেলে আধা ঘন্টায় উত্তরা থেকে মতিঝিল

আত্মজার সঙ্গে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে

তারিক মাহমুদ
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০

আমার ভিতরে বাস করে এক ভবঘুরে মন। সে কেবলই ঘুরে বেড়াতে চায়। অচেনা অজানা জায়গায়। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে চায় এখানে সেখানে। অনেকদিন ধরে ঢাকার বাইরে যাই না। মন কেমন কেমন উতলা হয়ে আছে। ঠিক সে সময়েই আমার নদী বললো, চলো আব্বু, দুরে কোথাও ঘুরে আসি। বেড়ানোর জন্য আমি ছিলাম উন্মুখ। মেয়ের প্রস্তাব পেয়ে আমিও সানন্দে রাজি হয়ে গেলাম। যখন সে বলেছে, তখন দুপুরবেলা। নদী তো একটা চাকরিও করে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে। বাইরে বেড়ানোর কথাবার্তা বলছিল তার অফিসে বসেই। আমি তখন বাসায়। মুঠোফোনের আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হলো, আমরা কক্সবাজার যাবো। আজই। বৃহস্পতিবার রাতের বাসে। নদী জানালো, সে অফিস শেষ করে সাতটার ভিতরে বাসায় চলে আসবে। তারপর রাতের বাসে কক্সবাজার। আমিও সেই মতো স্বল্পকালীণ ভ্রমণের কথা মাথায় রেখে সব ব্যবস্থা করতে শুরু করে দিলাম।
আমাদের বাসার কাছেই গ্রীণ লাইন পরিবহনের বাসের কাউন্টার। গিয়ে জানলাম, রাতে আধা ঘন্টা পর পর বাস ছাড়ে। ডবল ডেকার বাসে ১৭০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকার কয়েক রকম টিকিটের ব্যবস্থা রয়েছে। রাতে আমরা কক্সবাজারের উদ্দেশ্য রওনা হয়ে গেলাম। গ্রীণ লাইন পরিবহনের বাসগুলো খুবই আরামদায়ক। এখন শীতকাল। ধীরে ধীরে শীত বাড়ছে। গ্রীণ লাইনের সুপারভাইজার সবকিছু বুঝিয়ে দিলেন সুন্দর ভাবে। যাত্রীদের সঙ্গে ওদের ব্যবহারও চমৎকার। রাতে শীত নিবারনের জন্য একটা কম্বলও প্রতি সিটের সাথে দেওয়া আছে। সাথে পানির ব্যবস্থাও। নদী বললো, আব্বু এদের আপ্যায়ন কিন্তু ভালোই। আমি বললাম, ঠিক বলেছো মা। যথা সময়ে বাস ছেড়ে দিলো। শহরের সীমানা ছাড়িয়ে যেতেই সব বাতিও নিভিয়ে দিলো। ঘুমাতে চেষ্টা করছে সবাই। নদী মোবাইলে গান শুনছে। আমিও চোখ বন্ধ করে ঘুমুতে চেষ্টা করলাম। কুমিল্লায় আমাদের বাস যাত্রা বিরতি দিলো। সেখানে যার ইচ্ছে খাওয়া সেরে নিতে পারে। বিরতির সময় ২০মিনিট। নদী নামলো। বললো, চলো সামান্য কিছু খাই। হোটেলের নামও বিরতি। হরেক রকমের খাবারের আয়োজন রয়েছে। যে যার ইচ্ছে মতো খেতে পারে। এই হাইওয়ে রেষ্টুরেন্টগুলো গড়ে উঠায় যাত্রীদের যাত্রা বিরতিতে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে। যদিও বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টের সেবার মান নিয়ে অভিযোগ আছে যাত্রীদের। নদী গরুর মাংস, ভাত, ডাল নিলো। আমারও একই খাবার। দু’জনে তৃপ্তি সহকারে খেলাম। খাবারের দামও সাধ্যের মধ্যে মনে হলো। তারপর আবার বাস কক্সবাজারের উদ্দেশ্য রওনা দিলো। ঘুমুতে ঘুমুতে পৌঁঁছে গেলাম কক্সবাজার। রাস্তাও আরামদায়ক। কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই ভোর ৬টায় আমরা বন্ধু নাজমুল টিটুর পুরাতন বাংলোতে পৌঁছে গেলাম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের প্রিয় সহপাঠী, বন্ধু নাজমুল টিটু আমাদের খুব আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করলো। বন্ধুটি সরকারি কর্মকর্তা। কিছুদিন আগে বদলি হয়ে কক্সবাজার এসেছে নতুন দায়িত্ব নিয়ে।
একটু ঘুমিয়ে সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টের সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে গেলাম। লোকজন প্রচুর। তবে শুক্রবার বলেই মানুষের ঢল নেমেছে মনে হলো। তারপর এখন পর্যটন মৌসুম চলছে। করোনা সংক্রমনের ভয় উপেক্ষা করেই সারা দেশের মানুষের ঢল এখন কক্সবাজারে। নদী তো খুব খুশি। সমুদ্র দেখেই তার মন ভালো হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে নদী হারিয়ে যেতে চায়। আমি বুঝালাম। এভাবে যেও না। বিপদে পড়বে। নদী বললো, তুমি জানো না আব্বু। এখন পরিবেশ অনেক ভালো। তাছাড়া টুরিস্ট পুলিশ রয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টা ওরা দেখে। আমি বুঝলাম, দেখলাম। পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক সুন্দর। ব্যবস্থাপনাটা ভালো বলেই মনে হলো। সৈকতে কোন ময়লা-আবর্জনা নেই কোথাও। সবাই সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় সচেতন।
হাজার হাজার মানুষ থাকলেও কেউ কোথাও কোন ময়লা ফেলছে না। ঝামেলা করছে না। তবে কিছু হকার রয়েছে। রয়েছে কিছু বিনোদনের ব্যবস্থা। মানুষ এবং প্রয়োজনের তুলনায় এসব সুযোগ সুবিধা খুবই অল্প বলে মনে হলো। পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আরো যত্নশীল হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সারাদিন সমুদ্র সৈকতে কাটিয়ে আমরা আবার রাতের বাসে ঢাকা ফিরে এলাম। ঢাকা টু কক্সবাজার ভ্রমণ খারাপ লাগেনি। আপনারা চাইলেও একদিনের জন্য এমন একটি ট্যুর দিয়ে আসতে পারেন। ৮ ডিসেম্বর ২০২০।
তারিক মাহমুদ : লেখক।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© 2020, All rights reserved By www.paribahanjagot.com
Developed By: JADU SOFT