মালয়েশিয়ায় কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশটিতে চলছে একটানা লকডাউন। সরকার বাধ্যতামূলক করেছে স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্ব ও বিভিন্ন বিধিনিষেধ। সব নীতিমালা অনুসরণ করে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দিন-রাত কাজ করে এই করোনা মহামারীতেও প্রায় এক লাখ পাসপোর্ট বিতরণ করেছে। যাতে করে প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের কর্মক্ষেত্রে সঠিক সময়ে ভিসা রিনিউ করতে পারেন। বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুরের আমপাং শাখা পাসপোর্ট অ্যান্ড ভিসা উইং থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সূত্র মতে, সিএমসিও এবং এসওপি নির্দেশনা মেনে প্রতিদিন এক হাজার ৩০০ পাসপোর্ট ডেলিভারি এবং প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ৫০০ নতুন পাসপোর্টের আবেদন এন্ট্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও অন্যান্য সেবা নিয়মিত দেয়া হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় সরকারি ছুটি শনিবার ও রোববার। এই দুই দিন দূতাবাসের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রবাসীদের দ্রুত পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করতে পাসপোর্ট সার্ভিস শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। গত নভেম্বর থেকে দেশটিতে শুরু হয়ে গেছে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া রিকলিব্রেশন। এই বৈধকরণ পরিকল্পনার কারণে নতুন পাসপোর্টের আবেদন বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। প্রবাসীদের হাতে দ্রুত পাসপোর্ট পৌঁছে দিতে পাসপোর্ট কার্যক্রম সময়োপযোগী করতে এনালগ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার সরকার স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম এসওপি ঘোষণার মাধ্যমে অধিক গণজমায়েতকে নিষিদ্ধ করেছে। তবুও প্রবাসীদের পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ মহামারীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দূতাবাসের কর্মীরা পাসপোর্ট বিতরণ করে যাচ্ছে। বিদেশী দূতাবাসের মধ্যে একমাত্র মালয়েশিয়া ডাকের মাধ্যমে পাসপোর্ট এপ্লিকেশন রিসিভ সিস্টেম চালু রেখেছে। পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য অনলাইন বুকিং সিস্টেম চালুর পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা সমাধানের বিষয়টি সহজতর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট অ্যান্ড উইং) মশিউর রহমান জানান, মালয়েশিয়া সরকার একটানা লকডাউন ঘোষণার পাশাপাশি কন্ডিশনাল মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (সিএমসিও), স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম (এসওপি) জারি করে রেখেছে। এসব সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করে পাসপোর্ট সার্ভিস স্বাভাবিক রাখা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারওয়ার অভিবাসী দিবসে তার বক্তব্যে বলেন, পাসপোর্ট দ্রুত ডেলিভারি দিতে এরই মধ্যে হাইকমিশনে ছয়জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং আরো নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মালয়েশিয়া পোস্ট অফিসের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে যাতে করে পাসপোর্ট মালয়েশিয়া দূর-দূরান্তে কর্মরত কর্মীদের সহজে পৌঁছে দেয়া যায়। বৈধকরণ নিয়ে হাইকমিশনার জানান, রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নিয়োগদাতা বা মালিক নির্ভর। না জেনে না বুঝে তাই কারো সাথে আর্থিক লেনদেন না করার পরামর্শ দেন তিনি।
Leave a Reply