গাড়ি চুরি করতে চালক নিয়োগ দিতো চোরাই চক্রের সদস্যরা। এরপর চুরি করা গাড়ি কখনো বিক্রি করে আবার কখনো মালিকের কাছে ফেরত দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিতো তারা। চক্রটি পেশাদার চালকদের গাড়ি চুরির জন্য প্রলুব্ধ করে এবং লোভনীয় প্রস্তাব দেয়।সোমবার দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ঢাকার ডেমরা এলাকায় একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে মিনি ট্রাক বা পিকআপ ভ্যান চুরি করে আসছিল। এ চক্রের সদস্যরা এতোটায় চতুর যে, সহজে তাদের শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। চালক গাড়ি রেখে হোটেলে খেতে ঢুকলেই তারা মাস্টার কি ব্যবহার করে ইঞ্জিন চালু করে গাড়িটি নিয়ে চলে যেত। প্রাথমিকভাবে চক্রটির সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। পরে ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকার ডেমরা ও কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ৪ সদস্য সোহেল (২৭), রুবেল (৩০), মনির হোসেন (৪০) ও আজিজুলকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে তিনটি পিকআপ উদ্ধার করে সিআইডি।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, চক্রটি গাড়ি চালকদের চুরির জন্য মোটিভেশন করে, এরপর তাদের লোভনীয় অফার দেয়। চালকদের সঙ্গে মিশে চক্রটি পিকআপ ভ্যান চুরি করে। এরপর গাড়িতে রাখা ডকুমেন্ট থেকে মালিকের মোবাইল নম্বর নিয়ে ফোনে যোগাযোগ করে বিকাশে টাকা দাবি করতো। বিকাশে তাদেরকে টাকা পাঠালে গাড়ি ফেরত দিতো। অনেক সময় টাকা নিয়ে গাড়ি ফেরত না দিয়ে আরও টাকা দাবি করতো। পরবর্তীতে চক্রটি গাড়িগুলোকে নিজেদের গ্যারেজে নিয়ে বিভিন্ন অংশ খুলে বা পরিবর্তন করে রেখে দিত। ফলে মূল মালিক খোঁজাখুঁজি করেও গাড়ি শনাক্ত করতে পারতেন না। অনেক সময় তারা চুরি করা গাড়ির যন্ত্রাংশ খুলে অন্যত্র বিক্রি করতো।
সিআইডি জানায়, চক্রটি করোনাকালীন ১৫-২০টি গাড়ি চুরি করেছে। তাদের কাছ থেকে তিনটি চোরাই পিকআপ ভ্যান, ৯টি মোবাইল ফোন, ১৪টি সিম কার্ড, একটি মাস্টার চাবি, প্লায়ার্স, স্টিল রেঞ্জ ও হেক্সো ব্লেড উদ্ধার করা হয়। চোরচক্রের সদস্যরা তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply