প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ত্রিশাল উপজেলার কোনাবাড়ী -হরিরামপুর সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয় গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের মে মাসে কাজ বুঝিয়ে দেয় উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে। সড়কের সংস্কারকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে দুই মাস না যেতেই উঠে গেছে পিচ ঢালাই। গাইডওয়ালের পরিবর্তে বাঁশের খুঁটি ও পিচ ড্রামের টিন ব্যবহার করায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সড়কে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সুবিধাভোগী ও সংশ্নিষ্টদের গাফিলতির ফলে বরাদ্দের ‘দুই কোটি টাকাই যেন জলে যাচ্ছে’।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের কোনাবাড়ী গ্রাম থেকে হরিরামপুর ইউনিয়নের আমতলী মোড় কোনাবাড়ী-হরিরামপুর সাত কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হয় গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি। ওই সড়ক সংস্কারকাজে ব্যয় নির্ধারণ হয় প্রায় দুই কোটি টাকা। কাজের দায়িত্ব পায় মেসার্স কে কে এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ সম্পন্ন করে গত মে মাসে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে সড়কটি বুঝিয়ে দিয়েছেন ঠিকাদার।
কাজের মান ভালো হয়েছে বলে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান দাবি করলেও সড়কের সংস্কারকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে দুই মাস না পেরোতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ ঢালাই। পাকা গাইডওয়াল নির্মাণেও ব্যাপক অনিয়ম করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তিনশ মিটারের ইটের গাঁথুনি ও পিলারের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের খুঁটি ও পিচ ড্রামের টিন। এতে পুকুরের পাড় দেবে ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে পানিতে বিলীনের পথে ওই সড়ক। সংশ্নিষ্টদের সুবিধাভোগ ও গাফিলতির ফলে সড়ক সংস্কারকাজের বরাদ্দের ‘দুই কোটি টাকাই যেন জলেই গেল’।
সরেজমিন কোনাবাড়ী-হরিরামপুর সড়ক এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কের অনেক স্থানে উঠে গেছে পিচ ঢালাই। তিনশ মিটার পাকা গাইডওয়াল নির্মাণের কথা থাকলেও দেখা মেলেনি একশ মিটারের বেশি। ইটের গাঁথুনি ও পিলারের পরিবর্তে গজাইরার খালের কাছে দুটি পুকুরের কিছু অংশে ব্যবহূত বাঁশের খুঁটি ও পিচ ড্রামের টিনের গাইড চোখে পড়ে। ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে সড়কের নওপাড়া ও কোনাবাড়ী গজাইরারচর এলাকায়।
নওপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম সজল, কোনাবাড়ী গজাইরারচর এলাকার আবদুল আজিজ বাচ্চু, ছামছুল রাজ, আমিরুল ইসলাম, মিজান মিয়া, কাইয়ুমসহ স্থানীয়রা জানান, সড়কের সংস্কারকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। পাকা গাইডওয়াল নির্মাণেও ব্যাপক অনিয়ম করেছেন ঠিকাদার। আর্থিক সুবিধা নিয়ে কাজের মান যাচাই করেননি দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা।
উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, ভালো মানের কাজ হয়েছে। তবে ওই সড়কের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী শওকত খান। সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply