সেনেগালের রাজধানী ডাকারে একমাত্র নারী বাসচালক এনদিয়ে আসতু থিয়াম। ৩১ বছর বয়সী এ তরুণী এই কাজে আছেন ১৪ বছর ধরে। তিনি বাসটির মালিক হতে চান।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৪০ কোটি কর্মক্ষম নারী পুরুষের সমান অর্থনৈতিক সুযোগ পান না। এমনকি ১৭৮ দেশে আইনগত বাধার কারণেই নারীরা পুরোপুরি অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ‘উইমেন, বিজনেস অ্যান্ড দ্য ল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, ৮৬ দেশে নারীদের চাকরির ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের বিধি-নিষেধে পড়তে হয় এবং ৯৫ দেশে সমান কাজের জন্য সমান পেমেন্টের গ্যারান্টি নেই। বিশ্বজুড়ে নারীরা এখনো পুরুষের বিপরীতে আইনগত অধিকার ভোগ করেন তিন-চতুর্থাংশ, যাতে ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ৭৬.৫ স্কোর আসে। তাই নারীর সমান আইনগত অধিকার প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারিতে নারীর জীবন ও জীবিকায় যে প্রভাব পড়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের ২৩ দেশ ২০২১ সালে তাদের আইন সংস্কার করেছে, যা নারীর অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে একটি বহু প্রত্যাশিত পদক্ষেপ। বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ননীতি ও অংশীদারি বিষয়ক এমডি মারি পাংগেস্তু বলেন, ‘যদিও নারীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে কিছুটা উন্নতি ঘটেছে, কিন্তু এখনো বৈশ্বিক হিসাবে পুরুষ ও নারীর সারা জীবনের আয়ের মধ্যে ব্যবধান ১৭২ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্ব জিডিপির প্রায় দ্বিগুণ। আমরা যদি সবুজ, স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন চাই, সরকারগুলোকে আইনগত সংস্কার বাড়াতে হবে, যাতে নারীরা তাঁদের পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারেন এবং সমানভাবে লাভবান হন।’

বিশ্বব্যাংকের এ প্রতিবেদন অনুযায়ী নারী-পুরুষ সমতার ক্ষেত্রে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৪তম। চলাচলের স্বাধীনতা, কর্মক্ষেত্র, বেতন, বিবাহ, অভিভাবকত্ব, উদ্যোক্তা, সম্পদ ও পেনশন—এই আটটি সূচকের ওপর ৩৫টি প্রশ্নের ভিত্তিতে এই স্কোর নির্ণয় করা হয়েছে। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৪তম; স্কোর ১০০-এর মধ্যে অর্ধেকের কম, ৪৯.৪। ২০২১ সালেও বাংলাদেশের স্কোর একই ছিল। ৩৮.১ স্কোর নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে একমাত্র আফগানিস্তান। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের গড় স্কোর রেকর্ড করা হয়েছে ৬৩.৭। এই অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে নেপাল, তাদের স্কোর ৮০.৬।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান অর্থনীতিবিদ কারমেন রেইনহার্ট বলেন, ‘নারীরা কর্মক্ষেত্রে সমান অধিকার পাবেন না, যদি না তাঁরা বাসায় সমান অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।’
Leave a Reply