জাতীয় রাজস্ব বোর্ড – এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দারা রানার অটোমোবাইলস লিঃ এ অভিযান চালিয়েছে। এতে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ৭০.৪৭ কোটি টাকার ভ্যাটযোগ্য বিক্রয়মূল্য গোপন করেছে।এই গোপনকৃত বিক্রয়মূল্যে প্রায় ২০.৮৬ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি সংঘটিত হয়েছে।
রানার অটোমোবাইলস লিঃ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়, ২৫৫ তেজগাও ই/এ, ঢাকা-১২০৮, যার বাণিজ্যিক আমদানিকারক ১৩৮/১ তেজগাও ই/এ, ঢাকা-১২০৮ (এর ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর ০০০৪০৭৬৬৮-০২০৩) এবং কারখানাঃ প্যারাগন (বারচালা), ভালুকা, ময়মনসিংহ (এর ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর ০০০৪০৭৫৬২-০১০৩) এ অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠানটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি যার অধীন ১টি কারখানা, ১টি বাণিজ্যিক আমদানিকারক এবং একাধিক শোরুম রয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারক হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল এবং থ্রি হুইলার আমদানি করে কোনরূপ পরিবর্তন না করে গ্রাহকের নিকট সরবরাহ করে থাকে। কারখানা হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি মোটরসাইকেল সিকেডি অবস্থায় আমদানি করে তা সংযোজন করে সরবরাহ করে। কারখানা হতে তিন ধরনের গ্রাহকের নিকট বিক্রয় করা হয়:(১) করর্পোরেট গ্রাহক (২) ডিলার এবং (৩) নিজস্ব শোরুম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্রেতা ভ্যাট গোয়েন্দা দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার সহকারী পরিচালক মোঃ হারুন অর রশিদ এর নেতৃত্বে গত ৩০/০৩/২০২২ তারিখে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে গোয়েন্দার দল দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানটি মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।পরিদর্শনের শুরুতে কর্মকর্তাগণ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হলে প্রতিষ্ঠানের সিএফও শনদ দত্ত ভ্যাট কর্মকর্তাগণের চাহিদা অনুসারে ভ্যাট দলিল উপস্থাপন করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মূসক ফাঁকির আলামত থাকায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে রক্ষিত কিছু বাণিজ্যিক ও মূসক সংশ্লিষ্ট দলিলাদি জব্দ করা হয়।এসব তথ্য ভ্যাট দলিলাদির সাথে ব্যাপক অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়।
তদন্ত অনুসারে, জুলাই/২০১৬ হতে জুন/২০২১ পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ১৮৩৪,৪৯,৮১,৮১৭ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি মাসিক রিটার্নে সর্বমোট ১৭৬৪,০২,৩৩,১৫৬ টাকা বিক্রয় হিসাব প্রদর্শন করেছে।রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ৭০,৪৭,৪৮,৬৬১ টাকা।
তদন্ত অনুসারে এক্ষেত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ১৫,৫৯,৫৭,২৭৬ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে।এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে ৫,২৬,০৯,৩৯৫ টাকা সুদসহ সর্বমোট ২০,৮৫,৬৬,৬৭১ টাকা প্রযোজ্য।
তদন্তে পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে প্রেরণ করা হয়েছে।একইসাথে প্রতিষ্ঠানটি সেবা প্রদানের বিপরীতে মূসক চালান যথাযথভাবে প্রদান করছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট মূসক সার্কেল ও বিভাগীয় অফিস হতে তদারকি জোরদার করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।
Leave a Reply