ডলারের বাজারে অস্থিরতা ও উচ্চমূল্যের মধ্যে মে মাসে দেশে আসা প্রবাস আয়ের প্রবাহ কমেছে। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) মে মাসে প্রবাসীরা ১৮৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২১৭ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত বছরের একই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ১৩ শতাংশ।
আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার চাপে বৈদেশিক মুদ্রার সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশের আমদানি দায়ের বড় একটি অংশ পূরণ করে থাকে প্রবাসীদের রেমিটেন্স। কিন্তু চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই এ খাতে ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধি রয়েছে।

এর আগে এপ্রিলে ২.০৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে, যা ছিল চলতি অর্থবছরের কোনো একক মাসে আসা সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। যার অর্থ, এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ১২৫ মিলিয়ন ডলার বা ৬.২৩ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সরকারের রেমিট্যান্স অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ বিলিয়ন ডলার। তবে প্রথম ১১ মাসে অর্জিত হয়েছে মাত্র ১৯.১৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭৩.৮০ শতাংশ পূরণ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বরাবরের মত এবারও রেমিটেন্স বেশি এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। মে মাসে মোট ১৫৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলার এসেছে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে, যা গত মাসের মোট রেমিটেন্সের ৮৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। আর রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলার, যা মে মাসের মোট রেমিটেন্সের ১৫ শতাংশ।
গত ২৫ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিলো ৪২ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে বর্তমান আমদানির ধারা অনুযায়ী ৬ মাসের ব্যয় মেটানো সম্ভব।

এদিকে বৈধ পথে প্রবাস আয় বাড়াতে সম্প্রতি পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রবাসী আয়ে ২.৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা পাওয়ার শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে পাঁচ লাখ টাকার বেশি আয় পাঠাতে আয়ের নথিপত্র জমা দিতে হতো। এতে বেশি পরিমাণ অর্থ পাঠাতে পারতেন না বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরা। এখন থেকে কোনোপ্রকার নথি জমা দেওয়া ছাড়াই প্রণোদনা পাবেন তারা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে আয় পাঠিয়ে প্রবাসীরা লাভবান হয়েছেন। এখন তারা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো কমিয়েছেন। আনুষ্ঠানিক চ্যানেলগুলোর সাথে সরকার ডলার বিনিময়ের হার সমন্বয় করলে ব্যাংকের মাধ্যমে আসা রেমিট্যান্স আরও বাড়বে বলে মনে করেন তারা।
Leave a Reply