দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প প্রাণ ফিরে পাচ্ছে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার নতুন কাজের মাধ্যমে। তিনটি বড় শিল্প গ্রুপ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের প্রায় দুই ডজন জাহাজ নির্মাণের অর্ডার পেয়েছে। এই অর্ডারের ফলে স্থবির হয়ে যাওয়া জাহাজ নির্মাণ শিল্পে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব এক্সপোর্ট-ওরিয়েন্টেড শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের (এইওএসআইবি) সভাপতি আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ডঃ আবদুল্লাহেল বারী বলেন, জাহাজ নির্মাণ খাত দেশের অর্থনীতিতে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। বর্তমানে তিনটি বড় কোম্পানির হাতে জাহাজ নির্মাণের প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকার অর্ডার এসেছে। এটা আমাদের জন্য বড় সুখবর।
দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় জাহাজ নির্মাতা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড প্রায় ২,৩০০ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছে এবং কর্ণফুলী শিপইয়ার্ড পেয়েছে প্রায় ২০০০ কোটি টাকার অর্ডার। আনন্দ শিপইয়ার্ড প্রায় ৭০০ কোটি টাকার নতুন অর্ডার পেয়েছে।
খুলনা শিপইয়ার্ডের জেনারেল ম্যানেজার (ডিজাইন অ্যান্ড প্ল্যানিং) ক্যাপ্টেন আল আমিন চৌধুরী বলেন, আমরা একটি ৭০ মিটার ক্রুজ জাহাজ, পায়রা বন্দরের জন্য দুটি টাগবোট, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জন্য চারটি ২৪ ইঞ্চি ড্রেজার নির্মাণের কাজের আদেশ পেয়েছি। বিআইডব্লিউটিএর পাঁচটি ৬০ মিটার প্যাট্রোল ক্রাফট, নৌবাহিনীর জন্য তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক, তিনটি ডাইভিং ভেসেল, কোস্ট গার্ডের জন্য ৭০ টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি আধুনিক ভাসমান ক্রেন, কোস্টগার্ডের জন্য দুটি ডাইভিং বোট, দুটি ফেরি, এবং একটি জরিপ নৌকাসহ আরও কয়েকটি ছোট অর্ডার নিয়ে কাজ করছি আমরা। এই জাহাজগুলি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের (কেএসবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আবদুর রশিদ বলেন, আমরা বর্তমানে একটি হেলিপ্যাডসহ একটি মাদার ভেসেল, চারটি উপকূলীয় জাহাজ, তিনটি ক্রুজ শিপ, কয়েকটি জরিপ জাহাজসহ আরও কয়েকটি অর্ডার নিয়ে কাজ করছি। এই সমস্ত অর্ডার ২০২৪ সালের মধ্যে সরবরাহ করতে হবে।
ডঃ আবদুল্লাহেল বারী জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সম্ভাবনা সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশী জাহাজ নির্মাতারা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে উচ্চমানের জাহাজ উৎপাদনের জন্য একটি খ্যাতি প্রতিষ্ঠা করেছে এবং এটি বিদেশে তাদের পণ্যগুলির একটি শক্তিশালী চাহিদা তৈরি করেছে, যার ফলে ক্রেতাদের আগ্রহ এবং ইতিবাচক শিল্প প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
Leave a Reply