ঢাকা থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ট্রেন যাবে।
কালুরঘাট সেতুর সংস্কার শেষ হওয়া নিয়ে শঙ্কা এবং দোহাজারি সেকশনে পুরানো রেলপথ থাকায় ট্রেন চলাচলে ভুগতে হবে। চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারি পর্যন্ত এই সেকশনে ট্রেন চলবে ধীরে। একইভাবে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে কক্সবাজার যাওয়ায় মাঝপথে এক থেকে দেড়ঘণ্টা সময়ক্ষেপন হতে পারে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলে আপাতত তিনটি প্রতিবন্ধকতা দেখা যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে রেল চলাচল শুরু করা গেলেও পরবর্তীতে পরিকল্পনা অনুসারে ট্রেন চলাচল বাড়ানো ও দ্রুত ট্রেন চলাচলে এ তিনটি সংকট থেকে মুক্তি পেতে হবে।’
ইতোমধ্যে কালুরঘাট সেতুটি সংস্কারে দরপত্র আহবান করা হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি। যে কারণে আগামী সেপ্টেম্বরে ট্রেন চালুর যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তার আগে সংস্কার কাজ শেষ হওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমরা দরপত্র যাচাই বাছাই কাজ শেষ করেই কাজ শুরু করে দিব। প্রাথমিকভাবে ১৫ জুন থেকে কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরুর টার্গেট নেয়া হয়েছে।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন ও স্টেশনের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। কক্সবাজারে আইকনিক স্টেশনে প্লাটফর্ম ও প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জ প্রস্তুত করা হয়েছে। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার রেললাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় এই রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ ধরা হলেও ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজটি পুরোপুরি শেষ করতে চায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। যদিও আগামী সেপ্টেম্বরেই ঢাকা থেকে কক্সবাজারে ট্রেন চলাচলের ঘোষণা দিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান পূর্বদেশকে বলেন, ‘প্রকল্পের ৮৪ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। সেপ্টেম্বরের আগেই অনন্ত ট্রেন চলার মতো কাজ শেষ করতে চাইছি। পরবর্তীতে হয়তো অন্যান্য কাজগুলো করতে পারবো। অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় নিলে এ রুটে আরো ট্রেন চালানো সম্ভব। কিন্তু কোচ ও ইঞ্জিন সংকট রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো ঠিক হয়ে যাবে।’
ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পক্ষ থেকে দুটি সময়সূচির প্রস্তাবনা রেলভবনে পাঠানো হয়েছে। প্রথম প্রস্তাবনা ঢাকা থেকে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে ভোর সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছবে। ফিরতি পথে সকাল ১০টায় কক্সবাজার স্টেশন থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় ঢাকা থেকে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে সকাল সাড়ে ৯টায় কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছবে। ফিরতি পথে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে রাত ১০টায় ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছবে। এই রুটে আপাতত একটি ট্রেন চলাচল করবে। কোরিয়া থেকে সর্বশেষ আনা মিটারগেজ কোচ দিয়ে এই ট্রেনের রেক সাজানো হবে। কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে একটির বেশি ট্রেন চালানোর জন্য এখনই প্রস্তুত নয় রেলওয়ে।
Leave a Reply